বেশি দামে ডলার কেনাবেচা: ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আসতে পারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনা-বেচা করায় কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ১০ ব্যাংকের কাছে জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত সপ্তাহে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ব্যাংকগুলোর ডলার কেনা-বেচায় যে অনিয়ম পেয়েছি, তার ওপর ভিত্তি করে শাস্তি আরোপ করা যায়। তারপরেও কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি আরোপ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।”

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

তিনি বলেছেন, ”যদি স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সম্প্রতি শেষ হওয়া ১৩টি ব্যাংকের ওপর বিশেষ পরিদর্শনে অধিকাংশ ব্যাংকের ডলার কেনা-বেচায় ব্যাপক গড়মিল পাওয়া যায়। পরিদর্শন দলের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কিছু ব্যাংক ১১৪ টাকায় ডলার কিনে ১২০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি করেছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক নির্ধারিত হার অনুসারে, ব্যাংকগুলো বর্তমানে প্রবাসীদের রেমিট্যন্স গ্রহণ ও রপ্তানি বিলের জন্য দিতে পারবে ১০৯.৫০ টাকা এবং বিক্রি করতে পারবে ১১০.৫০ টাকায়।

এদিকে, অতিরিক্ত দামে ডলার বেচা-বিক্রির বিষয় প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে ৬টি ব্যাংককে আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো থেকে সেই জরিমানার টাকা আদায় করা হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে খুবই গোপনীয়তা অবলম্বন করায় তা গণমাধ্যমে আসেনি।

নথিপত্র অনুসারে, গত ১৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) নিয়ে ব্যাংকার্স সভা করে। সেখানে একটি সরকারি ব্যাংকের এমডির বক্তব্যে ৬টি ব্যাংকের জরিমানার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

এর আগে ২০২২ সালের অগাস্টে, অতিরিক্ত দরে ডলার কেনা-বেচায় দেশি-বিদেশি ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসরাণ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময়ে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের নাম এসেছিল সংবাদমাধ্যমে।

সে সময় ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কৈফিয়ত চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে একমাস পরে ট্রেজারি প্রধানদের পুনর্বহালের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

সৌজন্যে: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *