আমদানি, রপ্তানি, রেমিটেন্স ও নগদ কেনাবেচায় বিদেশি মুদ্রার একাধিক বিনিময় হারকে একটিতে নামিয়ে আনার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এবার রপ্তানি আয়ে ডলারের দর ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে।
২ জুলাই, রোববার থেকে রপ্তানি আয়ে ডলারের নতুন দর ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা কার্যকর হবে।
এদিকে এদিন থেকে আন্তঃব্যাংক দর অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের এর চেয়ে কম দরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ডলার পেত সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) গত ২৬ জুন ভার্চুয়ালি সভা করে রপ্তানি আয়ের ডলার প্রত্যাবাসনের হার বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নেয়।
এ সিদ্ধান্তের ফলে রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ডলারের বিনিময় হারের ব্যবধান কমে ১ টাকায় নামল। বর্তমানে রেমিটেন্সে ডলার দর ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর ঈদের ছুটির আগে সর্বশেষ কর্মদিবসে ব্যাংকে নগদ টাকায় ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৯ টাকায়।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ মেনে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে একক বিনিময় হার নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রোববার থেকে কার্যকর হতে যাওয়া জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালের মুদ্রানীতিতেও বলা হয়েছে, বিনিময় হার ধীরে ধীরে বাজারভিত্তিক করা হবে।
আন্তঃব্যাংক দরে ডলার বিক্রিতে বাংলাদেশ ব্যাংক
নতুন মুদ্রানীতি অনুযায়ী রোববার থেকে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে আগের মতো কম দামে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর ডলার পাবে না বাণিজ্যিক ব্যাংক।
বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রির দর বাড়ালেও এতদিন তা আন্তঃব্যাংকের দরের নিচেই ছিল। বর্তমানে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দর ১০৮-১০৯ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। আর সবশেষ ব্যাংকগুলোর কাছে ১০৬ টাকায় ডলার বেচেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন সিদ্ধান্তের ফলে প্রধান এ বিদেশি মুদ্রা কিনতে আরও বেশি পয়সা গুনতে হবে সরকারকে।
আমদানি, রপ্তানি, রেমিটেন্স ও নগদ বিক্রিতে ডলারের যে একাধিক দর রয়েছে, তা একক দরে নিয়ে আসতে সস্তায় ডলার বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সদ্য শেষ হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করেছে, তার বেশির ভাগের ক্রেতাই সরকার। জ্বালানি, সারসহ বিভিন্ন সরকারি কেনাকাটা ও পুরনো দায় পরিশোধে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে সরকার এ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকের চাহিদা মেটাতেও ওই অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করার তথ্য গত ১৮ জুন জানিয়েছিলেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
তিনি বলেছিলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক আর ডিসকাউন্ট রেটে ডলার বিক্রি করবে না।’’
এরপরের কয়েক কর্মদিবসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার যেমন বিক্রি করেছে, তেমনই বাজার থেকে ডলার সংগ্রহও করেছে।