পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও অতিরিক্ত প্রণোদনা দিলে অভিবাসীরা আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ‘রেমিট্যান্স ইনফ্লো ইন বাংলাদেশ: অপরচুনিটিস, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড পোটেনশিয়াল সলুশনস’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের পরিবারের সামনে আসা চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (আরএমএমআরইউ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তাসনিম সিদ্দিকী।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই প্রবাসীরা তাদের পরিবারের অভিবাসন প্রকল্পের খরচ বহন করে চলেছে; দেশে বা বিদেশে কোথাওই তাদের শোষণ এবং প্রতারণার শিকার হওয়া সমীচীন নয়। এমনকি বিনিময় হারের পার্থক্যের কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়া থেকে তাদেরকে রক্ষা করার ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আইনি জটিলতা সত্ত্বেও অনেক অভিবাসী এবং তাদের পরিবার সহজ লেনদেনের জন্য হুন্ডি মাধ্যম ব্যবহার করেন।
তাই কেবল শ্রম অভিবাসীদের ক্ষেত্রে বিনিময় হারের পার্থক্য মেটাতে বর্তমান প্রণোদনার ২.৫ শতাংশ সাময়িক বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন তিনি।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীনও অনুষ্ঠানে প্রণোদনা বাড়ানোর প্রস্তাবকে সমর্থন করেন।
২০২১-২২ অর্থবছরে আনুমানিক ১১-১২ লাখ কর্মী বিদেশে যাওয়া সত্ত্বেও রেমিট্যান্সের সীমিত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী।
তিনি বিদ্যমান ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি কালো টাকা কমানোর উপায় খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, আরও সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও রেমিট্যান্স প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে বৈধ চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স নিয়ে আসা সম্ভব।
মোবাইল ব্যাংকিং লাইসেন্স প্রদানের কথা তিনি উল্লেখ করে বলেন, রেমিট্যান্সের সুবিধার্থে আরও লাইসেন্স প্রদান করে একটি উন্মুক্ত বাজার তৈরি করা যেতে পারে।
তবে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছেন।
প্রণোদনা বাড়ানো বা বজায় রাখা কোনো সুফল বয়ে আনবে না বলে মনে করেন তিনি; কারণ হুন্ডি পদ্ধতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এর পরিবর্তে অভিবাসন খরচ কমানোর ওপর জোর দেন ড. মনসুর।
এই অর্থনীতিবিদ আরও উল্লেখ করেন, অনেক বয়স্ক প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন, যাদের সঞ্চয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য। তিনি এমন ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন, যাতে করে এই প্রবাসীরা দেশে ফিরে আসতে উৎসাহিত হন; এতে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।
বেটার বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের (বিবিএফ) চেয়ারম্যান মাসুদ এ খানের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকায় সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আলদুহাইলান; জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মোঃ শহিদুল আলম; বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মোঃ হাবিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের উপদেষ্টা এম এস সিদ্দিকী।
সৌজন্যে: টিবিএস