বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো ২০২২ সালে আগের বছরগুলোর তুলনায় বেশি ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করতে পেরেছে। ক্রেডিট কার্ডের বিভিন্ন সুযোগ সুবধিা গ্রাহক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে গ্রাহকদের মধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, বিশেষ করে বিনা সুদে ৪৫ দিনের জন্য ঋন সুবিধাটি অনেকের কাছেই এখন আকর্ষণীয় মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২ সালে ব্যাংকগুলো গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২.৮২ লাখ ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করেছে, যেটি ২০২১ সালের (১.৯৩ লাখ) তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২১.১৫ লাখ।
তবে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বিশ্লেষেকরা জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যদি ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতার শর্ত আরোপ না করতো, তাহলে এই ‘প্লাস্টিক মানি’র গ্রাহক আরও বাড়তো।
ক্রেডিট কার্ড বিতরণের দিক থেকে দেশের প্রথমসারির ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং মো. মাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, এটা সুখবর। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারতো যদি ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা না হতো।’
ব্যাপক সমালোচনার সত্বেও এনবিআর এই নিয়ম জারি করে। ফলে ক্রেডিট কার্ড থেকে ঋন নেওয়া আগের তুলনামূলকভাবে কমেছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের ঋণ আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেড়ে ২,২২৯ কোটি থেকে হয়েছে ২,৪৯৮ কোটি টাকা। আর ২০২১ সালে তার আগের বছরের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে ৪২ শতাংশ।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং মো. শাফকাত হোসেন বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড এখন লাইফস্টাইল পণ্যে পরিণত হয়েছে। কনজ্যুমারিজসের সঙ্গে সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের চাহিদাও বেড়েছে।’
২০২২ সালে এমটিবি ৪৫ হাজার ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করেছে, আর ব্যাংকটির বিক্রিত ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার।
বিদেশে ভ্রমনের সময়ও ক্রেডিট কার্ড একটি প্রয়োজনীয় ব্যাপারে পরিণত হয়েছে এখন।
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামালও ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের শর্তকে একটি বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, এই শর্ত না থাকলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারির সংখ্যা আরও বাড়তো।
সূত্র: দ্য ডেইলি স্টার